জাতীয় পর্যটন নীতি ২০১০ এর সংক্ষিপত বিবরন ? (National Tourism Policy 2010's concrete description?)
জাতীয় পর্যটন নীতি ২০১০ এর সংক্ষিপত বিবরন ?
(National Tourism Policy 2010's concrete description?)
নীতিমালা হচ্ছে সিদ্ধান্ত এবং যৌক্তিক ফলাফল লাভের একটি স্বাভাবিক ব্যবস্থা। মূলত এটি একটি বিবৃতি থাকে যা একটি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রেতিটি বিষয়ের আপেক্ষিক গুনাবলীর উপর নির্ভর করে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। জাতীয় পর্যটন নীতি ২০১০ এর ও ব্যতিক্রম নয়।
১. পর্যটন শিল্প বিকাশের গুরুত্বঃ পর্যটন একটি বহুমাত্রিক শিক্ষা। সহজাত ভ্রমণের নেশায় প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে মানুষ দেশ দেশান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছে। গত শতাব্দি প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়ন, অসংখ্য স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের অভ্যুদয় প্রবৃদ্ধি বিস্তারের কারণে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি কৃষ্টি এবং সভ্যতা দেখার সহজাত আগ্রহে পর্যটন সারাবিশ্বে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে।বর্তমান বিশ্বের প্রায় বেশির ভাগ দেশের গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষনের মধ্যে পর্যটন একটি। সারাবিশ্বে পর্যটন কর্মসংস্থান ও আয়বর্ধনে বহুমাত্রিক পর্যটন ও সবা শিল্প বিশাল ভূমিকা পালন করছে। জনবহুল এদেশেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে পর্যটন শিল্প এক অমিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।
১৯৩৯ সালে পর্যটন' শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার হয়। ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন "বিশ্ব পর্যটন সংস্থা" (UNWTO) গঠন করেন। বাংলাদেশ ও এ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বিশ্বের অর্থনৈতিক, মানবিক ও আন্তজাতিক সর্ম্পক উন্নয়নে দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে এসবর্ধমান হারে ভূমিকা রাখছে। "বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ-ব দ্বীপ একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ পর্যটন সমভাবনার দেশ। পৃথিবীর দীর্ঘতম নিরবচ্ছিন্ন। বন, নদী, নালা, চা-বাগান যা বিশ্বে পর্যটন আকর্ষণ (Tourism product) হিসেবে পরিচালিত হয়। সু-পরিকল্পিত কর্ম কৌশল ও সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে এ সকল অমিত সম্ভাবনাময় জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে৷ তলেই এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে ।
* জাতীয় পর্যটন উন্নয়ন নীতির যৌক্তিকতা:
বাংলাদেশের পর্যটন এখনো প্রারম্ভিক (Traking off) পর্যায়ে রয়েছে। বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শিল্পটি কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। তবে শিল্পটিকে বাস্তবমুখী ও সময়োপযোগি নীতিমালা প্রথায়ন করা হয়।* পর্যটন নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:-
বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম খাত হিসেবে গড়ে তোলা বাংলাদেশের তথা কর্মসংসস্থান সৃষ্টি ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীব বৈচিত্র্যের ও সংরক্ষণের মাধ্যমে টেকসই পর্যটন উন্নয়ন সাধনই হচ্ছে এ নীতির মূল লক্ষ্য।
অন্যান্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলঃ-
১.রাষ্ট্রের উন্নয়ন কৌশল, নীতি ও কর্মসূচিতে পর্যটন উন্নয়ন অন্তভুক্তকরন
২. বাংলাদেশে সুপরিকল্পিত পর্যটন উন্নয়ন ও রক্ষনাবেক্ষণ।
৩.পর্যটন শিল্প বিকাশে গবেষণা, বিপনন কৌশল প্রনয়ন ও মহাপরিকল্পনা (Master plan) প্রণয়ন।
৪.পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ঘোষনা ও Exclusive Tourist zone সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ সৃষ্টি ।
৫.SAARC ও BIMSTEC অন্তর্ভুক্ত দেশসহ সমন্বিত আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক কর্মসূচি গ্রহণ।
৬.সুলভ অভ্যন্তরীণ পর্যটন উন্নয়ন।
৭. বহুমাত্রিক পর্যটন বিকাশে আন্ত্রঃমন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সাধন।
৮. পর্যটন আকর্ষণ চিহ্নিতকরণ, উন্নয়ন ও বিপনণ ।
৯. বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য সমন্বিত উদ্দ্যোগ।
১০. বিশ্ব পর্যটন সংখ্যা (UNWTO)পর্যটন সংক্রান্ত সকল আনন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং সংস্থাসমূহ হতে সহায়তা গ্রহণ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা।
পর্যটন নীতির প্রধান প্রধান দিকসমূহঃ
১.বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের যথাযথ সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ সৃষ্টির পরিবর্তন সম্ভব তা নিম্নরূপঃ মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবস্থার আমূল
২.পর্যটন শিল্প উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনা মন্ত্রণালয় ও সংস্থাসমূহকে সম্পৃক্ত করে বহুমুখী সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন ও সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষসহ (MDG) বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অর্ন্তভুক্তকরণ।
৩.পর্যটন শিল্প বিকাশে বেসরকারী ও বিদেশী বিনিয়োগ ও প্রবাসি বাংলাদেশিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা ও সরকারী ও বেসরকারীঅংশীদারিত্বে পর্যটন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন
৪.অবকাঠামো ও উপরিকাঠামো প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্দোক্তাদের অংশগ্রহন ও উৎসাহিতকরণ।
৫.পৃথিবীর প্রধান পর্যটক উৎস পেশাসমূহে সফরে আনুষ্ঠিকতা সহজীকরণ।
৬.পর্যটন আকর্ষণসমূহের বহুমুখীকরণসহ এ্যাডভেঞ্চার, পর্যটন, ট্রেকিং, সার্ফিং, পর্যটন হাইকিং, ক্রীয়া পর্যটন। ধর্মীয় পর্যটন বিভিন্ন ধরনের পর্যটন উন্নয়ন সাধন।
এছাড়াও পর্যটন ক্ষেত্রে প্রধান প্রধান পর্যটন আকর্ষণ উন্নয়ন করা দরকার। যেমন
১.সমুদ্রসৈকত ও প্রাকৃতিক পর্যটন বিশ্লষন উন্নয়ন
২.টেকসই ইকো টুরিজম উন্নয়ন
৩.প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক পর্যটন উন্নয়ন
৪.নৌ পর্যটন ও গ্রামীণ পর্যটন উন্নয়ন
৫. ধর্মীয় 'সাংস্কৃতিক, অভ্যন্তরীণ ক্রীয়া যুব পর্যটন উন্নয়ন,
৬.বিবিধ।
জাতীয় পর্যটন নীতির বাস্তবায়ন কৌশল:-
বহুমাত্রিক শিল্প হিসেবে পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় পরিকল্পনা, পর্যাপ্ত পুঁজি বিনিয়োগ, আর্থিক ও কারিগরি সাহায্য সংগ্রহ এছাড়া ও পর্যটকদের বিভিন্ন প্রকার আবাসন ( হোটেল, রেস্টুরেন্ট) ও প্যাকেট ট্যুরের জন্য উপযুক্ত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রতিকূল পরিবেশে সৃষ্টি করাও জরুরি। বর্ণিত প্রেক্ষিতে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও পর্যবেক টনের সাথে সম্পৃক্ত সকল গোষ্ঠির মধ্যে নিবিড় সমন্বয় সাধন করবে।
দেশের পর্যটন উন্নয়ন সাধনের জন্য
★পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়,
★ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়,
★ শিক্ষা মন্ত্রনালয়,
★ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়,
★স্থানীয় সরকার কার্যকর ভূমিকা পালন করেন।
জাতীয় পর্যটন পরিষদঃ পর্যটন শিল্পের সার্বিক বিকাশের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃতে ও একটি জাতীয় পর্যটন পরিষদ কার্যকর থাকবে।
পর্যটন সংকান্ত সভা কমিটিঃ লক্ষ্য ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১টি মন্ত্রি সভাকমিটি কার্যকর থাকা এছাড়াও ও পর্যটন সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় - সমন্বয় ও বাস্তবায়ন বিভাগীয় ও স্থানীয় পর্যায় বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহকে
# জাতীয় পর্যটন নীতিমালা বাস্তবায়নে গৃহিত পদক্ষেপঃ
জাতীয় নীতিমালা বাস্তবায়নে গৃহিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যেমন:-
* পর্যটন এলাকা ও পর্যটন আকর্ষন চিহ্নিতকরণ:-
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যটন এলাকা চিহ্নিতকরণ, পর্যটন সম্ভাব্য স্থানগুলোর প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণী পরিবর্তন অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ ও নিয়ন্ত্রনকল্পে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ। ব্যক্তিখাতে বিভিন্ন স্থাপনাগুলোকে তালিকাভুক্তকরণ ও সরকারি জবাবদিহিতা আনয়নয়ন।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর /সমূহের সমৃক্তকরণঃ-
পর্যটন শিল্পের অর্থবহ উন্নয়ন, বাস্তবায়ন ও সংরক্ষনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্তকরণ।★পর্যটন খাতে দেশি, অনাবাসি বাংলাদেশি ও বৈদেশিক পুঁজি বিনিয়োগ ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পর্যটন শিল্পকে রপতানিমুখী শিল্পের সুবিধাপ্রদান।
★ ইজারা প্রদান।
★সহজশর্তে ঋণ প্রদান।
* পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন:-
১.ভবিষ্যৎ উন্নয়নে পর্যটন রূপকল্প প্রণয়ন।২.মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সময়াবদধ ও সাধা পরিকল্পনা গ্রহন। এ
৩.দেশের পর্যটন আকর্ষণ স্থানসমূহকে অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টিকরণ।
*পর্যটন উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দ্যোগঃ
★বিদেশী টি পর্যটকদের জন্য বিশেষ অঞ্চল চিহ্নিতকরণ
★বিমান ও পর্যটন সংস্থার যৌথ উন্নয়ন,
★ বিদেশী পর্যটকদের জন্য বিশেষ অঞ্চল চিহ্নিতকরণ
★বিমান ও পর্যটন সংস্থার যৌথ উন্নয়ন, বিদেশী পর্যটকদের জন্য ভিসা পদ্ধতি ও সীমান্ত আইন সহজীকরণ।
★ এশিয়া ও বহির্বিশ্বের পর্যটক উৎস দেশসমূহ চিহ্নিতকরণ।
★ বিপনন ও প্রচার
★পেশাগত জনবল গঠন
★পর্যটন সংক্রানত গবেষণা
★ যৌথ উদ্দ্যোগ
★পর্যটকের নিরাপত্তা
পর্যটন সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উওর :
পর্যটন বা ট্যুরিজম কাকে বলে?
স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ নেই এবং কোনো উপার্জন মূলক কর্মকান্ডের সাথে সংযুক্ত না হওয়ায় ভ্রমণকারীরা এবং সেখানের স্থানীয় জনসমাজ্যের সর্ম্পকের যোগফলকে পর্যটন বা ট্যুরিজম বলে।
No comments
Do leave your comments