Header Ads

Header ADS

চালর্স উডের ডেসপ্যাচ নীতি (Charles Wood Despatch Principle)

 ★চালর্স উডের ডেসপ্যাচ নীতি (Charles Wood Despatch Principle)



প্রশ্নঃ চার্লস উডের ডেসপ্যাচ এর মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে যে সুপারিশ মালা প্রণয়ন করা হয়েছিল তা আলোচনা কর? এই ডেসপ্যাচ নীতি কি ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে ম্যাগনাকার্টা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে ?

উত্তর:
ভূমিকা: উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আমল পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের পাঠক্রম ও গঠনরীতিতে কোনো সামঞ্জস্য ছিল না। এই পরিস্থিতিতে উডের ডেসপ্যাচ ঘোষনা করা হয়। 1813 খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্টে ভারতীয় জনগনের শিক্ষার বিস্তারের জন্য কোম্পানির তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হলেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পরিচালিত সরকার শিক্ষাকে সঠিক অর্থে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে মেনে নেয়নি। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে ধীরে ধীরে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ বাড়লেও কোনো সুনির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করে শিক্ষাব্যবথা পরিচালিত হয়নি। ডেসপ্যাচেই প্রথম একটি সুসংগঠিত সরকারি শিক্ষানীতির আভাস পাওয়া যায়।সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করেন  1904 খ্রিঃ।

 চালর্স উডের ডেসপ্যাচ:
বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চালর্স উড ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের জন্য ১৮৫৪ সালের ১৯  জুলাই একটি নির্দেশমালা প্রকাশ করেন, যা চার্লস উত্তের ডেসপ্যাচ নামে খ্যাত। উডের ডেসপ্যাচের মূল বক্তব্য ছিল পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটানো এবং মূল লক্ষ্য ছিল ভারতে ইংরেজি ও নারী শিক্ষার উন্নয়ন। উত্তের ডেসপ্যাচ রচনায় সদস্য ছিলেন মাত্র ১ জন অর্থাৎ চার্লস উত্ত নিজেই। উত্তের ডেসপ্যাচকে বলা হয় ভারতীয় শিক্ষার "ম্যাগনাকার্টা "বা "শিক্ষা অধিকার সনদ"। উত্তের ডেসপ্যাচ ১৮৫৪ সালে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল অব ব্রিটিশ ইন্ডিয়া, লর্ড ডালহৌসির (Lord Dalhousie) কাছে উপস্থাপন করা হয়। উডের ডেসপ্যাচ গৃহিত হয় ১৮৫৪ সালের জুলাই। এই শিক্ষাপ্রস্তাবে চার্লস উড ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার সুষ্ঠু বিকাশের লক্ষ্যে এক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ১৮৫৪ সালে প্রণীত ও গৃহীত হওয়া উডের ডেসপ্যাচ (woods despatch) ভারতের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই কারন পরবর্তীকালে ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে তথা শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় যত পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হয়েছে সবকিছুর মূলে উডের ডেসপ্যাচ কিছু না কিছু প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।

ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রস্তাব বা শিক্ষানীতি বলে অভিহিত উডের ডেসপ্যাচের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি শিক্ষার নিম্নগামী পরিস্রবণ নীতি' ত্যাগ করে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের দায়িত্ব স্বীকার করে নেয়। সুতরাং, এখানে উল্লেখ করা যায় যে, স্বাধীন ভারত, পাকিস্থান আমলের পূর্ব পাকিস্থান বা পূর্ববাংলা এবং বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চলে আসছে তার ভিত্তি রচিত হয়েছিল ইতিহাস প্রসিদধ এই শিক্ষা সংক্রান্ত দলিলে উত্তের ডেসপ্যাচে। উত্তের নির্দেশনামার ওপর ভিত্তি করে ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ওঠে। তাই এই নির্দেশনামাকে ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের "ম্যাগনাকার্টা " বা " মহাসনদ বলা হয়।


উড এর ডেসপ্যাচের সুপারিশসমূহঃ

আগামী দিনে শিক্ষাকে কীভাবে সংগঠিত করা হবে শিক্ষাক্ষেতে উভূত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান কীভাবে করা হবে, সে বিষয়ে এর ডেসপ্যাচে কতগুলো সুপারিশ লিপিবদ্ধ করা হয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সুপারিশ উল্লেখ করা হলোঃ

1. শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য: উডের ডেসপ্যোচের প্রস্তাবনাতে শিক্ষানীতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সর্ম্পকে কতগুলি বিষয় উল্লেখ করা হয়। সেগুলি হল- ও এদেশে শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো ভারতবাসীদের মধ্যে পাশ্চাত্য জ্ঞানের বিস্তার ঘটানো। এই জ্ঞান হবে ভারতীয় জনগণের কাছে পার্থীর আশীর্বাদস্বরুপ।

পাশ্চাত্য জ্ঞান ভারতবাসীর বুদ্ধির বিকাশের সাথে সাথে তাদের নৈতিক চরিত্র গঠনে ও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।এই শিক্ষার প্রসার ঘটলে কোম্পানি আগামী দিনে ভারতীয় জনগনের মধ্যে থেকে দক্ষ ও বিস্তৃত কর্মী পাবেএইএই শিক্ষার অন্য একটি উদ্দেশ্য হলো ভারতের কাঁচামাল ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে সে দেশে শিল্পের প্রসার ঘটানো এবং এদেশের বাজারে ইংল্যান্ডের তৈরি সামগ্রীর চাহিদা সৃষ্টি।

2. শিক্ষার পাঠ্যক্রম: উডের ডেসপ্যাচে ভারতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের গুরুত্বকে স্বীকার করা হলেও বলা হয় ভারতীয় দর্শন ও বিজ্ঞান ত্রুটি পূর্ণ। তাই পাঠ্যক্রমে পাশ্চাত্য দর্শন, বিজ্ঞান - সাহিত্য ও কলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

3. শিক্ষার মাধ্যম ও ভাষা শিক্ষা : ডেসপ্যাচে প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ভারতের অধিবাসীরা যাতে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনুশীলনের ক্ষেত্রে ইংরেজি ও দেশীয় ভাষা উভয়ই ব্যবহার করতে পারে সে বিষয়টিও উড এর ডেসপ্যাচে উল্লেখ করা হয়।

4. শিক্ষা বিভাগ স্থাপন: তদানীন্তন ভারতবর্ষে কোম্পানি অধিকৃত স্থান বাংলা, মাদ্রাজ, বোম্বাই, পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশ এই পাঁচটি অংশে বিভক্ত ছিল। এই পাঁচটি এখানে ছিল প্রাদেশিক শিক্ষা বোর্ড এবং কাউন্সিল তাফ এডুকেশন। কাউন্সিলের পরিবর্তে সরকারি শিক্ষা বিভাগ গঠনের কথা বলা হয়। এই বিভাগ পরিচালিত হবে DPI (Director of public Instruction) বা জনশিক্ষা অধিকর্তার মাধ্যমে / DPI এর অধীনে বহু সংখ্যক পরিদর্শক নিযুক্ত হবেন। শিক্ষা বিভাগ প্রত্যেক প্রদেশের শিক্ষার অগ্রগতির বিষয়ে প্রাদেশিক সরকারের কাছে বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করবে।

5. বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও সিনেট গঠনঃ উউ এর ডেসপ্যাচে ভারতের তিনটি এখানে কোলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শে একটি স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। করে বিশ্ববিদ্যালয় ঔ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সঠিকভাবেভাবে পরিচালনার 'সিনেট' গঠন করার ও প্রস্তাব দেওয়া হয়। সিনেটে থাকবেন একজন আচার্য। একজন উপাচার্য ও কয়েকজন সরকার মনোনীত সদস্য।

6. শিক্ষাব্যবস্থায় তরবিন্যাসের নীতিঃ উড এর ডেসপ্যাচে শিক্ষাব্যবস্থায় নির্দিষ্ট স্তরবিন্যাসের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। স্তরবিন্যাসের শীর্ষে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে মহাবিদ্যালয় সমূহ। মহাবিদ্যালয়ের ঠিক নিচের স্তরে থাকবে উচ্চবিদ্যালয় বা মাধ্যমিক শিক্ষার বিদ্যালয় এবং একেবারে নীচের স্তরে থাকবে প্রাথমিক বিদ্যালয়।

7. 'চুইয়ে পড়া' নীতির সমালোচনা ও জনশিক্ষার দায়িত্ব গ্রহন:- উত্ত এর ডেসপ্যাচে সেকলে প্রবর্তিত " চুইয়ে পড়া" নীতির সমালোচনা করা হয়। দেখা গিয়েছিল সরকারি বরাদ্দের অধিকাংশই খরচ করা হত মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষায়। এবং সমাজের উচ্চশ্রেনির মানুষের শিক্ষার স্বার্থে।তাই উড এর ডেসপ্যাচে নির্দেশ দেওয়া হয়- সারা ভারতবর্ষে অধিক সংখ্যক হাই স্কুল, মিডল স্কুল ও দেশীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়ে সরকার যাতে অধিক পরিমাণে জনশিক্ষা প্রসারের দায়িত্ব গ্রহণ করে, সে বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়।
৪ . ইংরেজির পাশাপাশি মাতৃভাষার চর্চা:-
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজিকে প্রাধান্য দেওয়া হলে ও মাতৃ ভাষা চর্চার ওপরেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশ্চাত্য জ্ঞান - বিজ্ঞানের প্রচার ও চর্চার ক্ষেত্রে ইংরেজির পাশাপাশি মাতৃভাষা চর্চা করা হয়৷
গ্রান্ট ইন এইড বা অনুদান প্ৰথার প্রচলন:-
উড এর ডেসপ্যাচে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য সত্য শর্তসাপেক্ষে 'গ্রান্ট ইন - এইড' প্রথা প্রচলনের সুপারিশ করা হয়। শর্তগুলির মধ্যে কয়েকটি হল:
★শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সামান্য হলেও বেতন সংগ্রহ করা
★ বিদ্যালয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বজায় রাখা
★ বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট কমিটি তৈরি।
★পরিদর্শকের নির্দেশমতো বিদ্যালয়ের কার্যাদি পরিচালনা এবং শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা শিক্ষার মান ও ফলাফল উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন ।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষনের ব্যবকথাঃ বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট স্কুল স্থাপন করা এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ কালে শিক্ষকদের জন্য বৃত্তিদানের ব্যবস্থা করা।

বৃত্তিমুখী শিক্ষার প্রচলন ঘটানো:-
সাধারণ ধর্মী শিক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা , আইন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি; কারিগরি শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে বৃত্তিমুখী শিক্ষাদানের ব্যবস্থাকরার প্রসঙ্গে উড-এর ডেসপ্যাচে অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

12. নারীশিক্ষার বিকাশ:- নারীশিক্ষার বিকাশের জন্য উড এর ডেসপ্যাচে অধিকসংখ্যক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। বালিকাদের উপযোগী পৃথক করা হয়। পাঠক্রম গঠনের প্রসঙ্গে ও অভিমত ব্যক্ত

13. সংখ্যালঘুদের শিক্ষা:-
মুসলমান সম্রাট বা রাজশক্তিকে পরাস্ত করে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয়েছিল। তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষায় কোনো উৎসাহ দেখাতো না। তাই তারা অনেক খানি পিছিয়ে পড়েছিল। উড এর ডেসপ্যাচে তাদের জন্য পৃথক ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করার সুপারিশ করা হয়।

14. পাঠ্য পুস্তক প্রনয়নঃ- উড এর ডেসপ্যাচে প্রাথমিক স্তরে এবং ক্ষেত্রবিশেষে মাধ্যমিক স্তরে মাতৃভাষারমাধ্যমেমাধ্যমে পঠনপাঠের সুপারিশ করা হয়। তাই ইংরেজি লেখা বিভিন্ন বইকে দেশীয় ভাষায় অনুবাদ করে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর বিষয়ে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

উত্তের ডেসপ্যাচের উদ্দেশ্য:- ৫ ভারতে প্রয়োজনীয় পাশ্চাত্য জ্ঞানের প্রসার ঘটানোই ছিল এই শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য।

এই শিক্ষার মাধ্যমে শুধুমাত্র বুদ্ধির ও চরিত্রের বিকাশ হবে না, এর মধ্য দিয়ে যোগ্য বিশ্বাসী কর্মচারী সৃষ্টি হবে।  ভারতবাসীরা যাতে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সুষ্ঠু সর্ম্পক বজায় রেখে কার্যকরী শিক্ষা লাভ করতে পারে তা দেখা কোম্পানির কর্তব্য।
ইউরোপীয় ব্যবসা-বাণিজ্য সর্ম্পকে ভারতীয়দের সচেতন করে তুলতে হবে এবং ইংল্যান্ডের প কারখানার জন্য প্রেয়োজনীয় কাঁচামালের সরবরাহ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়াও ব্রিটেনের উৎপন্ন পণ্যের জন্য ভারতীয় বাজারে অফুরন্ত চাহিদা সৃষ্টি করা ও ছিল এই শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য ও লম্ব লক্ষ্য।

ডেসপ্যাচের গুরুত্বঃ ১৮৫৪ সালে প্রকাশিত উত্তের ডেসপ্যাচ কেন গুরুত্ব পূর্ণ তা উপরে উল্লিখিত সুপারিশমালার সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে বোঝার কথা। তবে পাঠকদের বোঝা সহজতর করার জন্য এখানে বুলেট পয়েন্টে উল্লেখ করা হলো:

★সর্বস্তরের মানুষকে শিক্ষা প্রদানের সুপারিশ,

★কলকাতা,বোম্বে ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা,

★'নিম্নগামী পরিস্রাবণ নীতি বাতিল,

★নিম্নস্তরের মানুষদের শিক্ষার্জনের পক্ষে আর্থিক সাহায্য,

★ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায় গুরুত্বারোপ,

★নারী শিক্ষায় গুরুত্বারোপ,

★বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু,মুসলিমদের জন্য আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ গুরুত্বের সাথে গ্রহণ

প্রস্তাবনা পরবর্তী  গৃহিত ব্যবস্থা :  প্রস্তাবনা প্রেরণের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোমপানি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল।
১.১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়, এবং মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় এর মতো নতুন প্রতিষ্ঠান স্থাপনকরা হয়।
২. পাশাপাশি ১৮৮২ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় এবং
১৮৮৭ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩. ইংরেজি শিক্ষার প্রচার এবং প্রসার লাভ করে।

উত্তের ডেসপ্যাচের ত্রুটিঃ
উডেরর ডেসপ্যাচ পাশ্চাত্য শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য যে সুপারিশগুলো করেছিল তা ছিল প্রধানত শহরকেন্দ্রিকএই কারণে একে সাফল্যের সাথে শতভাগ বাস্তবায়ন করা
যায়নি।
উডের শিক্ষা প্রস্তাবের তাৎপর্যঃ উড এর শিক্ষা প্রচার ভারতীয় শিক্ষার ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হয়। প্রফেসর এস. এন মুখার্জি তার ভারতের শিক্ষার ইতিহাস" বইয়ে উড এর শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাবকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল বলে উল্লেখ করেছেন। এটি ভারতে ইংরেজি শিক্ষার ম্যাগনাকার্টা " হিসাবে বিবেচিত হয় ৷ প্রস্তাবনাগুলো প্রকৃতি পক্ষে এতটাই বিস্তৃত যে ভারতীয় শিক্ষাবীদর তখনও নির্ধারিত কাজগুলি সম্পাদনে সফল হতে পারেনি।

এটি এমন একটি পরিকল্পনা যাতে ভারতীয় শিক্ষার সমত দিককে যুক্ত করা হয়েছিল। আরও ভালোভাবে বলতে গেলে প্রস্তাবনাটিতে ইংরেজি এবং ভারতীয় ভাষার তুলনামূলক অবস্থানকে সঠিকভাবে ধরা হয়েছে। প্রস্তাবনাটির উদ্দেশ্য অত্যত আনতরিক ছিল কিন্তু সরকার এটিকেবাস্তবায়নেবাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়।

ডেসপ্যাচ ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে "ম্যাগনাকার্টা": ডেসপ্যাচ ভারতের শিক্ষাক্ষেএে ম্যাগনাকার্টা  হিসেবে বিবেচিত। বা শিক্ষা অধিকার সনদ বা মহাসনদ হিসেবে পরিচিত। কারন - ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোমপানি কর্তৃক গঠিত বোর্ড অব কন্ট্রোল এর স্যার চার্লস উড একটি শিক্ষা প্রতার প্রণয়ন করেন ও তা সরকারের কাছে উপস্থাপন করেন, চালর্স উত্তের ডেসপ্যাচ এর মূল বক্তব্য ছিল 'পাশ্চাত্য প্রসার ঘটানো এবং এর শিক্ষ্যার মূল লক্ষ্য ছিল " ভারতে নারী ও ইংরেজি শিক্ষার উন্নয়ন । উডের ডেসপ্যাচ রচনায় সদস্য ছিলেন মাত্র ১ জন অর্থাৎ চার্লস উত্ত নিজেই। 1 উত্তের ডেসপ্যাচ ১৮৫৪ সালে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল অব ব্রিটিশ ইন্ডিয়া ; লর্ড ডালহৌসির (Lord Dalhousie) কাছে উপস্থাপন করা হয়।

উডের ডেসপ্যাচ ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিকও উচ্চশিক্ষার সুষ্ঠু বিকাশের লক্ষে এক পরিকল্পনা গ্রহন করেন । এর প্রভাব পরিবর্তীতে "প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় পরিলক্ষিত হয়।
-অতএব নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উত্তের ডেসপ্যাচ ভারতীয় শিক্ষাক্ষেত্রে "ম্যাগনাকার্টা " বা " শিক্ষা অধিকার সনদ"।
উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে উত্তের ডেসপ্যাচকে ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে 'ম্যাগনাকার্টা' হিসেবে বিবেচনা করা যায়।

উপসংহারঃ আধুনিক শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে উত্তের নির্দেশনামা একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এটি ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাঠ্যক্রম ও পঠনরীতির মধ্যে সামজস্য আনতে সক্ষম হয়েছিল। ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে এটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এইজন্যই উড়ের নিদের্শনামাকে ভারতীয় শিক্ষার মহাসনদ বা ম্যাগনাকাটা ' বলা হয়।

পোস্ট ট্যাগ:

#উডেরডেসপ্যাচ#woodsdespatch#woodsprinciple#ভারতেরশিক্ষাসনদ#ম্যাগনাকার্টা#উডেরডেসপ্যাচেরসুপারিশ

No comments

Do leave your comments

Powered by Blogger.