Header Ads

Header ADS

স্যাডলার কমিশন কবে গঠিত হয়?এই কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা কর

 




প্রশ্ন:স্যাডলার কমিশন গুলো পর্যালোচনা করা ? কেন গঠিত হয় ? এই কমিশনের সুপারিশগুলো কি কি?

পটভূমিঃ লর্ড কার্জনের আমলে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন (1901 খ্রী.) পাশ হওয়ার পরে স্যার আশুতোষ মুখোপধ্যায়ের সুদক্ষ পরিচালনায় নানান দিক থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মের দ্রুত প্রসার ঘটে। সেই সঙ্গে বহু সমস্যাও দেখা দেয়। সেই সমস্যা সমাধান ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সংজ্ঞকারের জন্য 1917 Leeds University এর vice-chancheller  মাইকেল স্যাডলারের নেতৃত্বে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন বা স্যাডলার কমিশন গঠিত হয়।

ওই ভারতীয় সদস্য ছিলেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এবং জিয়াউদ্দীন আহম্মদ। আর অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন ড.গ্রেগরী ও স্যার ফিলিপ হার্টগ এবং অধ্যাপক রামজে মুর। স্যাডলার কমিশন ৭ সদস্য বিশিষ্ট ছিলেন এবং তারা ১৭ মাস বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে ১৩ টি রিপোর্ট জমা দেন। এটি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠন করা হয়েছিল  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা খাতিয়ে দেখার জন্য পরে  ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েরও সমস্যা বের করেন। 1919 সালে 13 টি রিপোর্ট পেশ করেন ৷
মাধ্যমিক শিক্ষার ত্রুটি ও কমিশনের সুপারিশ:
স্যাডলার কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেকগুলো এুটি লক্ষ করেন।

১. মাধ্যমিক শিক্ষার মান নিম্নগামী।

২.বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি শিক্ষা বিভাগের চাপের ফলে মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না।

৩.উচ্চমাধ্যমিকের দুটি শ্রেণিকে মহাবিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত করার ফলে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।

৪.বিদ্যালয়গুলিতে আর্থিক দুরবস্থা চলছে।

মাধ্যমিক শিক্ষার ত্রুটি সমাধানের সুপারিশ:-
১. শিক্ষকদের বেতনকাঠামো সঠিক নয়, এবং প্রশিক্ষণ প্রাপত শিক্ষকের অভাব।
এইসব ত্রুটি বা সমস্যা সমাধানের জন্য নিম্নলিখিত সুপারিশ করা হয়:-
১.উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নাম হবে ইন্টারমিডিয়েট এর। এই স্তরের শিক্ষা মাধ্যমিক শিক্ষার সঙ্গেই যুক্ত করা হবে।
২. দশম শ্রেনির পরে 'ম্যাট্রিকুলেশন' এবং পরবর্তী দু-বছরের অতিরিক্ত পাঠ শেষ করার পর ইন্টারমিডিয়েট নামক ২টি পৃথক পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. ইন্টারমিডিয়েট স্তরের জন্য পৃথক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ইন্টারমিডিয়েট পাঠক্রম পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. মাধ্যমিক ও ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষা পরিচালনার জন্য দুটি পৃথক পর্যদগড়ে তুলতে হবে।
৫. পর্ষদ গুলিতে বহুসংখ্যক বেসরকারি প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৬.প্রথমে ম্যাট্রিকুলেশন, পরে ইন্টারমিডিয়েট পাস করলে, তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ভর্তি হতে পারবে।
৭.ইংরেজি ও গণিত এই দুটি বিষয় ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতে হবে । বাকি গুলি মাতৃভাষার মাধ্যমে পড়া যাবে।
৮. মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার জন্য বছরে অতিরিক্ত ৪০লক্ষ টাকা বরাদ্দ করতে হবে এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষনের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে । প্রয়োজনে স্নাতক স্তরেও এডুকেশন বিষয়টি পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার ত্রুটি ও কমিশনের সুপারিশ: স্যাডলার কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে যে ত্রুটিগুলি লক্ষ করে সেগুলি হল :

১. বিশ্ববিদ্যালয়কে অধিকাংশ সময়ই প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই শিক্ষার মানোন্নয়নের কাজ ব্যাহত হয়। মহাবিদ্যালয়গুলিতে অর্থের অভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করা যায় না।
২.বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলিতে পাঠক্রম নেই। কারিগরি ও বৃত্তিশিক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে 'বক্তৃতা পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয় ফলে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রানিত হয় না।
৪.মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে শিক্ষকদের বেতন তুলনামূলকভাবে কম এবং চাকুরিতেও নিরাপত্তা কম।
৫.পাঠক্রম বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পর্কহীন।
৬. মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাএ কল্যানের দিকে নজর দেওয়া।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো করা হয় -
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মভার কমানোর জন্যঃ
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারমিডিয়েট শ্রেণিগুলিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে পৃথক ম্যাট্রিকুলেশন ও ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষার জন্য শিক্ষা পর্ষদ গড়ে তুলতে হবে।

পঠনপাঠনের কোর্স ও শিক্ষাদানের ছুটি দূর করার জন্যঃ -
১.স্নাতক কোর্স তিন বছরের হবে।

২. স্নাতক স্তরে পাস কোর্স এবং অনার্স কোর্স নামে দুটি পৃথক পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে।

৩. মহাবিদ্যালয় গুলিতে টিউটোরিয়াল ক্লাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণামূলক কোর্স পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. বিভিন্ন ধরনের বৃত্তিমুখী পাঠক্রম চালু করতে হবে। এ মহাবিদ্যালয়গুলিতে নতুন নতুন কোর্স বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. ইন্টারমিডিয়েট এবং অনার্স উভয় কোর্সে ভারতীয় আধুনিক ভাষা পঠনপাঠনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

৬.পরীক্ষা পদ্ধতির পুর্নবিন্যাস ও সংস্কার করতে হবে।

No comments

Do leave your comments

Powered by Blogger.